মঙ্গলবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

হয়তো বা কাল্পনিক


তুই কিন্তু আজও আসলি নাহ!

কানের কাছে অচেনা একটা হলুদ পাখি এসে ডেকে গেল অবিরাম

    ‘ওঠ! সকাল হয়েছে।চল অনেকদিন মেঘের বাড়ি যাইনি।দেরি করিস নাহ। চল!’

আমি বললুম, ‘আগে সেই গভীর কালো চোখ দু’টোকে দেখি।তারপর না হয়


হলদে ডানার পরী বিরক্তির সুরে একটার পর একটা গান গাইতে লাগলো।যেন দূর হতে ভেসে আসছে সে সুর।কোনো এক কল্পলোকের জোছনা হতে দৌড়ে এসে জাপটে ধরলো আমায়।

কিন্তু কই?
      তুই তো আজও আসলি নাহ
……

কেটে গেল অনেক মিনিট,সেকেন্ড,ঘণ্টা

যেন এক একটা শীত,বর্ষা,হেমন্ত


ক্লান্ত টেবিলটায় মুখ গুঁজে চুপচাপ পড়ে থাকলাম আমি।যেন বা ভুলেই গেলাম-আজ তোর আসার কথা।

এক পা, দু’ পা করে এগিয়ে যাচ্ছি অসীমের পানে।উদ্দেশ্য কিন্তু একটাই।

বিজয়?
নাহ।তোকে খুঁজে পাওয়া।

দরজাটা খুলে দিলাম।আচমকা একরাশ আলো এসে ঝলসে দিলো চোখ দু’টো।


-‘তুই এসেছিস!’ যন্ত্রের মতো কণ্ঠ্য আমার আজ কেমন প্রাণময় হয়ে উঠলো যেন।

-‘পাগল কোথাকার! তোর মাঝেই তো আমার বসবাস।তোকে ছাড়া আমায় আর কোথায় খুঁজে পাবি বলতো?’- পরিচিত কণ্ঠ্যে মৃদু ধমকের ছোঁয়া।




সাঁঝ পেরিয়ে এখন অনেক রাত।
আকাশে থালার মতো চাঁদ।
একটা-দু’টো তারাও দেখা দিয়ে জানান দিচ্ছে-
  ‘আমাদের ভুলে যেও না যেন!’

সামনে একটা ক্যানভাস।স্বচ্ছ তুলির আঁচড় যেন ক্ষণিকেই বদলে দিচ্ছে সামনের জগত।

এখন বৃষ্টি হচ্ছে।আমরা দু’জন পাশাপাশি দৌড়াচ্ছি।ভিজে কাক হয়ে যাচ্ছি।আপত্তি নেই।একটু পরেই হয়তো সামনে দেখবো-ঝরণার প্রবাহধারা।ডাকছে।অবগাহন করবো সেখানেও।
তারপরে তুষারপাত,ডুবসাঁতার
……


অন্তত পরাবাস্তবতার জগতে আমরা চিরসঙ্গী।
একজোড়া হলুদ ডানার পাখি।

আকাশের ভাঁজে ভাঁজে।










শনিবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

জোছনা

          -আগন্তুক



‘কে?
কে ডাকে?
রাত-দুপুরে আমার দরজায় কে টোকা মারে?’
আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে এলোমেলো চুলের ছেলেটা
আজকাল এভাবেই কথা বলে।
কেউ সাড়া দেয় না।
কল্পনায় অথবায় বাস্তবতায়।
জানালার ওপাশের সোনালি রোদ্দুর
আর নীল খামেদের জগত
দূর থেকেই বিদায় দেয় তাকে।
কাছে আসে না।
কী জানি!
কাছে আসলে যদি
বিষণ্নতার বাদলা হাওয়া
ভাসিয়ে নিয়ে যায় তাদের মুহূর্তগুলোকেও!

তাই গাংচিলের অবহেলায়
শালিকের ক্যানভাসটা রং হারাতে থাকে,
এক সময় রক্তের গাঢ়তা নষ্ট হয়ে যায়।
ফ্যাকাশে হয়ে যায় মেঘগুলো।
তবুও দু’চোখে সবুজ ছড়িয়ে
মেয়েটা দাঁড়িয়ে থাকে সাদা বাড়িটার ওপাশে।
এখানেই যে তাদের দেখা হবার কথা ছিল।
সেই জোছনাধারায় সিক্ত হয়ে ভালোবাসার কথা ছিল।
তাই খোঁপায় তাজা গোলাপের কষ্ট চেপে রেখে
অপেক্ষা করে যায় মেয়েটা।
কতো যুগ আগের সেই একটা কথার জন্য।
আঁধার ঘনিয়ে আসা গোধূলিতে
কেউ যে তাকে বলেছিল-
‘তুই দেখিস, আমি ঠিকই আসবো।
অপেক্ষা করিস; একটু দেরি হলে চলে যাস না যেন!’

তাই তো কাজল চোখের সবুজ
আজও অপেক্ষা করে যায়।
তার এক আকাশ নীলের জন্য।
শুধু তার নীলের জন্য।

চাঁদ আসে।
চাঁদ যায়।

শুধু সেই জোছনাটা আসে না।
হয়তো কোনোদিন আসবেও না।